গত ৭ই জুলাই সকাল থেকেই বলিউডের পরিবেশ থমথমে। সকাল ৭ টা পর্যন্ত আসে দুঃসংবাদ। পরলোক গমন করেন কিংবদন্তি অভিনেতা দিলীপ কুমার। পাশে ছিলেন তার ভালোবাসার মানুষ অর্থাৎ স্ত্রী সায়রা বানু। চলুন আজকে জেনে এই জুটির চিরও সবুজ লাভ স্টোরি।

সায়রা দিলীপের সম্পর্ক এত তাই যে তারা প্রমাণ করে দিলেন ভালোবাসা কোনো ধর্ম কর্ম বয়স অথবা রীতি নীতি অনুসরণ করে না ,তার ভালোবাসা এটাই অটুট যে এদের বয়সের ব্যবধান ছিল নাম মাত্র সংখ্যা। দিলীপ কুমার সায়রা বানুর থেকে প্রায় ২২ বছরের বড় ছিল। আগেকার দিনে ছেলেদের থেকে মেয়েদের বয়স কমই হতো বিয়ের ক্ষেত্রে। যদিও এই সময় পুরোটাই উল্টো। সমবয়সী বা মেয়েরা বয়সে বড় এরকমই ট্রেন্ড চলছে।

১৯৬৬- সালে ১১ অক্টোবর সায়রা বানু ও দিলীপ কুমার বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হন। প্রেম টা শুরু ছিল সায়েরা বানুর তরফ থেকেই কারণ তিনি দিলীপ কুমার এর জনপ্রিয় চলচ্চিত্র ‘মুঘল-ই-আজম’ দেখে দিলীপ কুমার কে মন দিয়ে বসে ১২ বছরের সায়রা । এরপর ‘ঝুক গয়া আসমান’ ছবির সেটে সায়রা বানুকে প্রোপোজ করেন দিলীপ সাব। যদিও এটাও সত্য যে দিলীপ কুমার বেশ কিছুদিন মধুবালার সাথে প্রেমের সম্পর্কের জড়িত ছিল। কিন্তু তাদের ভালোবাসা কখনো পরিপূর্ণতা পায় নি।

দিলীপ ও সায়রার দাম্পত্যের বয়স ৫৪ অর্ধ শতাধিক করেই ফেলেছেন এই জুটি। প্রায় সময় নিজেদের দাম্পত্যের ছবি পোস্ট করতেন দিলীপ কুমার এর সহধর্মিণী সায়রা বানু সোশ্যাল মিডিয়ায়। দিলীপ কুমারকে তার জীবনের (আলো) কোহিনুর বলে ভাবতেন অভিনেত্রী। এতটাই স্বামীর ভক্ত ছিলেন যে তার জন্য কেরিয়ার পুরোটাই বিসর্জন দেন একটা সময়। পুরোপুরি দিলীপ কুমারের ঘরনী হয়ে যান। কিন্তু এত ভালোবাসার পরও ও যদিও দিলীপ কুমার একটা সময় সায়রা বানুকে ছেড়ে নতুন বিয়ে করেন। এবং সেই সময় সায়রা বানু মন থেকে খুবই ভেঙে যান, যদিও ভালোবাসা ত্যাগ করেননি। দিলীপ কুমার সেই সময় বিয়ে করেন আসমা রেহমানকে ৷ যদিও এই বিয়ের দুবছর পর ফের সায়রা বানুর কাছে ফেরেন দিলীপ এবং এর পর আর ওয়াদা ভঙ্গ হননি।

এই জুটির ভালোবাসার গল্পঃ বলতে গেলে তাদের ভালোবাসার প্রতীক অর্থাৎ সন্তান প্রসঙ্গ টেনে নেয়া স্বাভাবিক দর্শকের জন্য। নাহ, এই জুটির সন্তান নেই। দিলীপ তাঁর ‘দ্য সাবস্ট্যান্স অ্যান্ড শ্যাডো’ আত্মজীবনীতে লিখেছিলেন, সায়রা মাঝে একবার গর্ভবতী হয়েছিলেন। কিন্তু হঠাৎই তাঁর গর্ভপাত হয়। তারপর আর কোনও দিন সায়রা সন্তানসম্ভবা হতে পারেননি। এই ঘটনা পর দুজনকে গভীর ভাবে পীড়া দেয়। কষ্ট হলেও একে অপরের সঙ্গ ছাড়েননি কখনো, যদিও প্রকৃতির নিয়মে কোহিনুর বিদায় নিল তার অমূল্য রতন সায়রাকে ছেড়ে।

অবশেষে বাকিটা জীবন সায়রা বানু এভাবেই কাটাতে হবে,দিলীপ কুমার এর স্মৃতি গুলো জড়িয়ে ধরে।