নিম একটি ঔষধি গাছ। যার ডাল, পাতা, রস সবই কাজে লাগে। যা প্রাচীনকাল থেকেই চর্মরোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়ে আসছে। নিম ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া নাশক হিসেবে খুবই কার্যকর। রূপচর্চায় নিমের ব্যবহারও প্রাচীন কাল থেকেই। স্বাস্থ্যগত গুণাগুণের পাশাপাশি নিম ত্বক এবং চুলের যত্নে অপরিহার্য। ব্রণ, ব্ল্যাকহেড, বলিরেখা, খুশকি কিংবা চুল পড়ার সমস্যাতেও নিঃসন্দেহে নিম ব্যবহার করা যায়। চলুন জেনে নিই, রূপচর্চায় নিমের যেসব ব্যবহার,

ব্রণ দূর করে: ত্বকে ময়লা ও ব্যাকটেরিয়া থেকে ব্রণের সৃষ্টি হয়। নিমে আছে অ্যান্টিসেপটিক ও ব্যাক্টেরিয়া-রোধী উপাদান যা ব্রণ কমাতে সহায়তা করে। নিম পাতা এগুলো সারিয়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই ব্রণের সমস্যা থাকলে ত্বকে নিম সমৃদ্ধ ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন। নিম পাতা সেদ্ধ করে সে পানিতে একটি তুলার বল ডুবিয়ে ব্রণের উপরে লাগিয়ে নিন।

দাগ কমাতে সাহায্য করে: নিম ত্বকের তেলের নিঃসরণ নিয়ন্ত্রণ করে, ক্ষত সারায়, কোলাজেন বৃদ্ধি করে এবং ব্রণের কারণে হওয়া দাগ কমাতেও সহায়তা করে। এটা ত্বকের কোষের আরোগ্যলাভ করতে প্রাকৃতিক উপাদান হিসেবে কাজ করে। নিম প্রাকৃতিকভাবে ত্বকের হাইপার পিগমেন্টেইশন ও দাগ কমাতে সহায়তা করে।

ব্ল্যাকহেড এবং মুখের গর্ত কমাতে: নিম মুখের ব্ল্যাকহেড, হোয়াইটহেড এবং বড় রোমকূপের সমস্যা সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এ সমস্যাগুলো থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্যে আপনাকে নিম পাতা গুঁড়োর সঙ্গে কমলালেবু খোসার গুঁড়ো মেশাতে হবে। দুই ধরনের গুঁড়ো মিশিয়ে মিশ্রণ তৈরি করে এর সঙ্গে অল্প মধু, দুধ এবং টক দই মেশান। সপ্তাহে অন্তত তিনবার ব্যবহার করুন ভালো ফলাফলের জন্যে। আপনার শুধু ব্ল্যাকহেডের সমস্যা থাকলে আক্রান্ত স্থানে নিম তেল মালিশ করুন।

টোনার ব্যবহারে: প্রত্যহ ব্যবহার করলে নিম বলিরেখা এবং মুখের দাগ দূর করতে বেশ কার্যকরী। এটি মুখের কালচে ভাবও কমিয়ে আনে। ছেঁকে নেওয়া নিম পাতার পানি ব্রণের দাগ হালকা করে ত্বককে সুন্দর করতে সাহায্য করে। এর জন্য নিম পাতা সেদ্ধ করে পানি ঝরিয়ে নিন। ঠাণ্ডা হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন এবং প্রতি রাতে মুখের ত্বকে লাগান। তৈলাক্ত ত্বক হলে এর সঙ্গে গোলাপ জল মেশাতে পারেন। পরের দিন সুন্দরভাবে মুখ ধুয়ে ফেলুন।

চুলের সমস্যা দূর করে: নিমের অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টিসেপটিক গুণের কারনে এটি স্কাল্পের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে সাহায্য করে। এছাড়া এটি চুল বড় করতে এবং খুশকি দূর করতেও ভূমিকা রাখে। মাথার তালুতে নিম তেল ম্যাসাজ করুন। এতে করে আপনার চুলের গোড়া শক্ত হবে। খুশকি দূরীকরণে, নিম পাতা গুঁড়োর সঙ্গে পানি মিশিয়ে মাথার তালুতে লাগান। এক ঘণ্টা রেখে শ্যাম্পু করে ফেলুন।

ত্বকের ইনফেকশন দূর করে: নিম পাতায় অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টিফাংগাল এবং অ্যান্টিভাইরাল উপাদান থাকায় এটি ত্বকের ইনফেকশন সারাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এর জন্য কয়েকটি নিম পাতা নরম হওয়া পর্যন্ত সেদ্ধ করতে হবে। পানি ছেঁকে গোসলের পানির সঙ্গে মিশিয়ে ফেলুন। প্রতিদিন এ পানিতে গোসল করলে ত্বকের ইনফেকশন ধীরে ধীরে ঠিক হয়ে যাবে।